আমাদের পরিবেশ

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বিজ্ঞান - NCTB BOOK
Please, contribute to add content into আমাদের পরিবেশ.
Content

জীব ও জড় বস্তুর মধ্যকার সম্পর্ক

পরিবেশের উপাদানগুলোকে আমরা জীব ও জড় এই দুই ভাগে ভাগ করি। মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা এরা হলো জীব। মাটি, পানি, বায়ু, গাড়ি, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি হলো জড়।

প্রশ্ন : জীব কীভাবে জড়ের উপর নির্ভরশীল?

কাজ :  বেঁচে থাকার জন্য জীবের যা প্রয়োজন

কী করতে হবে :

১. নিচে দেখানো ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি।

জীববেঁচে থাকার জন্য যে জড় বস্তু প্রয়োজন
মানুষ 
অন্যান্য প্রাণী 
উদ্ভিদ 

২. জীবের বেঁচে থাকার জন্য যে সকল জড় বস্তুর প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করি।

৩. কাজটি নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করি।

 

Content added By

মানুষ

বেঁচে থাকার জন্য মানুষ বিভিন্ন জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে। মানুষের শ্বাস গ্রহণের জন্য বায়ু এবং পান করার জন্য পানি প্রয়োজন। পুষ্টির জন্য খাবার প্রয়োজন। ফসল ফলানো ও বাসস্থান তৈরির জন্য মানুষের মাটি প্রয়োজন। এছাড়াও জীবন যাপনের জন্য বাসস্থান, আসবাবপত্র, পোশাক, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি প্রয়োজন।

অন্যান্য প্রাণী

অন্যান্য প্রাণীও বেঁচে থাকার জন্য জড় বস্তুর উপর নির্ভরশীল। সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য বায়ু, পানি ও খাদ্য প্রয়োজন। মাটি এবং পানি অনেক জীবের বাসস্থান। অনেক পোকামাকড়, কেঁচো ইত্যাদি মাটিতে বাস করে। আবার মাছ, চিংড়ি পানিতে বাস করে।

উদ্ভিদ

বেঁচে থাকার জন্য উদ্ভিদ পরিবেশের বিভিন্ন জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে। যেমন— মাটি, পানি, বায়ু ইত্যাদি। তাছাড়া সূর্যের আলোর উপরেও উদ্ভিদ নির্ভরশীল। উদ্ভিদ সূর্যের আলো, পানি ও বায়ু থেকে কার্বন-ডাই অক্সাইড ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। পানি আবার বিভিন্ন উদ্ভিদের আবাসস্থল। যেমন— শাপলা, কচুরিপানা ইত্যাদি।

জীব বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশের বিভিন্ন জড় বস্তুর উপর নির্ভরশীল। কোনো স্থানের সকল জীব ও জড় এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক ক্রিয়াই হলো ওই স্থানের বাস্তুসংস্থান।

 

Content added By

উদ্ভিদ ও প্রাণীর পারস্পরিক নির্ভরশীলতা

প্রশ্ন : উদ্ভিদ ও প্রাণী কীভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল?

কাজ : পারস্পরিক নির্ভরশীলতা

কী করতে হবে :

১. নিচে দেখানো ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি।

জীবকীভাবে পরস্পর নির্ভরশীল
উদ্ভিদ 
প্ৰাণী 

২. কীভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী পরস্পরের উপর নির্ভরশীল নিচের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে তার একটি তালিকা তৈরি করি।

৩. কাজটি নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করি।

 

Content added || updated By

পরিবেশে উদ্ভিদ ও প্রাণী একে অপরের উপর নির্ভরশীল। 

প্রাণী

প্রাণী বিভিন্নভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। খাদ্য তৈরির সময় উদ্ভিদের ত্যাগ করা অক্সিজেন প্রাণী শ্বাস গ্রহণের সময় ব্যবহার করে। উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ যেমন- কাণ্ড, শাখা ও ফলমূল প্রাণী খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। উদ্ভিদ আবার অনেক প্রাণীর আবাসস্থল। বানর, , কাঠবিড়ালি, পোকা-মাকড় ইত্যাদি গাছে বাস করে। পাখি গাছের ডালে বাসা বাঁধে। মানুষও তার বাসস্থান তৈরিতে উদ্ভিদ ব্যবহার করে।

উদ্ভিদ

উদ্ভিদ তার খাদ্য তৈরি, বৃদ্ধি, পরাগায়নবীজের বিস্তরণের জন্য প্রাণীর উপর নির্ভরশীল। 

উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির জন্য প্রাণীর ত্যাগ করা কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে। পুষ্টি উপাদানের জন্যও উদ্ভিদ প্রাণীর উপর নির্ভরশীল। প্রাণীর মৃতদেহ পচে প্রাকৃতিক সারে পরিণত হয়। এই সার পুষ্টি হিসেবে ব্যবহার করে উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে। পরাগায়নের ফলে উদ্ভিদের বীজ সৃষ্টি হয়। এই বীজ থেকে আবার নতুন উদ্ভিদ জন্মায়। বিভিন্ন প্রাণী যেমন— পাখি, মৌমাছি ইত্যাদি এই পরাগায়নে সাহায্য করে। মাতৃউদ্ভিদ থেকে বিভিন্ন স্থানে বীজের ছড়িয়ে পড়াই হলো বীজের বিস্তরণ। বীজের বিস্তরণ নতুন নতুন উদ্ভিদ আবাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

এভাবেই পরিবেশে উদ্ভিদ ও প্রাণী একে অপরের উপর নির্ভরশীল।

 

Content added By

বেঁচে থাকার জন্য জীবের শক্তি প্রয়োজন। উদ্ভিদ সূর্য থেকে শক্তি পায়। আর প্রাণী শক্তি পায় খাদ্য থেকে।

প্রশ্ন : প্রাণী কীভাবে শক্তির জন্য অন্য জীবের উপর নির্ভরশীল ?

কাজ : খাদ্য এবং খাদক

কী করতে হবে :

১. নিচে দেখানো ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি।

২. নিচের ছবিটি দেখি। ছবি দেখে কে কাকে খায় তা ক্রমানুসারে ছকে লিখি।

৩. কাজটি নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করি।

 

Content added By

খাদ্য শৃঙ্খল

সকল প্রাণীই শক্তির জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। উদ্ভিদ সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। পোকামাকড় উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে। আবার ব্যাঙ পোকামাকড়কে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। একইভাবে সাপ ব্যাঙ খায় এবং ঈগল সাপ খায়। এভাবেই শক্তি উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে প্রবাহিত হয়। বাস্তুসংস্থানে উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে শক্তি প্রবাহের এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়াই হলো খাদ্য শৃঙ্খল। সবুজ উদ্ভিদ থেকেই প্রতিটি খাদ্য শৃঙ্খলের শুরু।

খাদ্য জাল

যেকোনো বাস্তুসংস্থানে অনেকগুলো খাদ্য শৃঙ্খল থাকে। বাস্তুসংস্থানের সকল উদ্ভিদ ও প্রাণী কোনো না কোনো খাদ্য শৃঙ্খলের অন্তর্ভুক্ত। যেমন— ঈগল সাপ, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, ব্যাঙ ও অন্যান্য প্রাণী খেয়ে থাকে। আবার সাপ খরগোশ, ইঁদুর, ব্যাঙ ও অন্যান্য প্রাণী খায়। একাধিক খাদ্য শৃঙ্খল একত্রিত হয়ে খাদ্য জাল তৈরি করে।

 

Content added By

সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:

১) খাদ্য জাল ও খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্যে পার্থক্য কী ? 

২) উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীর উপর নির্ভরশীল ? 

৩) মানুষ নির্ভর করে এমন তিনটি জড় বস্তুর উদাহরণ দাও ?

৪) পরাগায়ন কী ?

বর্ণনামূলক প্রশ্ন :

১) খাদ্য শৃঙ্খলে কীভাবে সাপ এবং ঈগল একই রকম তা ব্যাখ্যা কর। 

২) নিচের শব্দগুলো নিয়ে গঠিত খাদ্য শৃঙ্খলের সঠিক ক্রম ব্যাখ্যা কর। 

       ঈগল, সূর্য, ঘাস, পোকামাকড়, সাপ, ব্যাঙ 

৩) জীব কীভাবে বায়ুর উপর নির্ভরশীল তা ব্যাখ্যা কর। 

৪) উদ্ভিদের জন্য বীজের বিস্তরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর। 

৫) তোমার ঘরের ভেতরে রাখা গাছটি মারা যাচ্ছে। তোমার বন্ধুরা গাছটিকে জানালার পাশে নিয়ে রাখার পরামর্শ দিল। কেন ?

Content added By
Promotion